প্রকাশিত: Wed, Mar 1, 2023 4:07 PM
আপডেট: Thu, Jun 26, 2025 2:48 PM

অতিথি আপ্যায়ন অভ্যাস, খাবার গ্রহণ ও পরিবেশন রুচির ব্যাপার

কবির য়াহমদ  : রাষ্ট্রপতির বাড়িতে ১৯ পদের খাবার খেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই মুহূর্তে অনেকের কাছে এটাই আলোচনার। এখানে অনেকের মন্তব্য তীর্যক। খাদ্য-বিপ্লবীদের দৃষ্টিতে এটা একপ্রকার অপরাধ। কেন অপরাধ? তাদের যুক্তিতে বাজারমূল্য, বিলাসিতা এবং অন্যান্য। রাষ্ট্রের খরচের প্রসঙ্গ এসেছে কারও কারও কথায়। হাওরের মানুষের খাদ্যাভ্যাস কিংবা অতিথি আপ্যায়নের ঔদার্যের প্রসঙ্গ এখানে অনুপস্থিত। তারা হয়তো জানেই না, একেক অঞ্চলে একেক প্রকার খাদ্যের উৎপত্তি-বিকাশ এবং বাঁচিয়ে রাখা। যে যেখানে থাকে সেখানকার আঞ্চলিক খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করতে চায় অতিথিকে। এটা সহজাত, ঐতিহ্যের অংশও। আপ্যায়নপকারী যেমন এসবে সম্মানিত হন, তেমনি সম্মানিত হন অতিথিও। অতিথি আপ্যায়নের এই ধারা আমাদের পুরনো। 

প্রসঙ্গক্রমে বলি, আপনি যদি আমাদের সিলেটে আসেন তবে মনেপ্রাণে চাইব একবেলা ‘হাতকরা’ (সাতকরা) দিয়ে গরুর মাংস খাইয়ে দিতে। খেতে-খেতে জানতেও চাইব কেমন হয়েছে; ভালো হয়েছে নিশ্চয়ই, একইসঙ্গে এই সাতকরার ইতিহাস, রেসিপি যতটুকু সম্ভব হড়বড় করে বলতেও শুরু করব। যাওয়ার সময় সম্ভব হলে একহালি হাতকরা কিনে দেওয়ারও চেষ্টা করব, নয়তো কিনতে উদ্বুব্ধ করব। এটা কেবল সিলেটের ক্ষেত্রেই নয়, অন্য অঞ্চলের মানুষদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। স্ব স্ব অঞ্চলের আঞ্চলিক খাবারে প্রশংসা, সঙ্গে রেসিপির টুকটাক বর্ণনা। স্থির মাথায় চিন্তা করে দেখুন, এসব কি হয় না? অতিথি আপ্যায়ন অভ্যাসের ব্যাপার, খাবার গ্রহণ-পরিবেশন রুচির ব্যাপার। 

এসব সকলের হয় না। কারও কারও হয়। যাদের হয় না তারা নিজেরা যেমন আপ্যায়ন করতে জানে না, তেমনি জানে না অন্যের আপ্যায়িত হওয়াকে সহ্য করতে। কঠিন হয়ে গেলো না কথাগুলো, হোক না। ১৯ পদের খাদ্য, বিপ্লবীদের দেখিনি কখনও খাদ্য, সমতার দাবিতে একবেলা অনশনে বসতে। অনশনে বসলেও অবশ্য সমস্যা নাই। ফলের রস নিয়ে অনশন ভাঙাতে আসবে সহ-বিপ্লবীরা। লেখক: সাংবাদিক